প্রতিদিন কয়টি ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত?
ডিম একটি সহজলভ্য ও পুষ্টিকর খাবার, যা প্রোটিনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎস হিসেবে পরিচিত। তবে প্রতিদিন কতটি ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত—এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে অনেকের মনে দ্বিধা থাকে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, সঠিক পরিমাণে ডিম খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হয়, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে।
পুষ্টিবিদদের তথ্য অনুযায়ী, একটি মাঝারি আকারের ডিমে থাকে প্রায় ৬–৭ গ্রাম প্রোটিন, ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল এবং ভিটামিন বি১২, ডি, এ, কোলিন, লুটিন, জিয়্যাক্সানথিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (বিশেষ করে DHA)। এসব উপাদান চোখ, মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতিদিন ১–৩টি ডিম খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ, যদি কারও কোলেস্টেরল বা হৃদরোগজনিত সমস্যা না থাকে। এক পুষ্টিবিদের ভাষায়, “দিনে তিনটি ডিম মানে প্রায় ১৮–২১ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, যা একজন সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক প্রোটিনের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করে।”
তবে সতর্ক করে বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, দিনে তিনটির বেশি ডিম খেলে হার্ট অ্যাটাক বা ধমনিতে ব্লকেজের ঝুঁকি বাড়তে পারে, বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই কোলেস্টেরল বেশি বা হৃদরোগের ইতিহাস আছে। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যদি পর্যাপ্ত পানি না পান করা হয়।
তাদের পরামর্শ, সেদ্ধ ডিম খাওয়া সবচেয়ে উপকারী, কারণ এতে ক্যালোরি ও কোলেস্টেরল তুলনামূলক কম থাকে। অন্যদিকে, তেলে পোচ বা স্ক্র্যাম্বলড করে খেলে ট্রান্সফ্যাট ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সকালে নাস্তার সঙ্গে ডিম খেলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট রাখতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ:
সাধারণ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক: দিনে ১–২টি ডিম।
নিয়মিত ব্যায়ামকারী বা পেশি গঠনকারীরা: দিনে সর্বোচ্চ ৩টি ডিম।
ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডিম খাওয়া উচিত নয়।
সঠিক পরিমাণে ও সঠিকভাবে রান্না করা ডিম নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে এটি শরীরের জন্য উপকারী,তবে অতিরিক্ত গ্রহণ এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে জানিয়েছেবিশেষজ্ঞরা।

Comments
Post a Comment