বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর টয়লেট
রাশিয়ার সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে রয়েছে এক ভয়ংকর টয়লেট, যেটিকে অনেকেই পৃথিবীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ টয়লেট বলে থাকেন। বরফে ঢাকা পাহাড়ের চূড়ায়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৬০০ মিটার (৮,৫০০ ফুট) উঁচুতে এই টয়লেট ঝুলে আছে একেবারে পাহাড়ের কিনারায়। নিচে হাজার ফুট গভীর খাদ চারপাশে শুধু বরফ আর তীব্র ঠান্ডা হাওয়া।
এই টয়লেটটি রাশিয়ার সাইবেরিয়ার কৃষ্ণয়া কামেনা নামের একটি দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। এটি মূলত স্থানীয় একটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অংশ, যেখানে কিছু বিজ্ঞানী ও কর্মী বছরের পর বছর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের কাজ করেন। তাদের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি করা হয় এই কাঠের টয়লেটঘরটি যা পাহাড়ের একদম প্রান্তে ঝুলে আছে।
এই টয়লেট ব্যবহার করা কোনো সাধারণ কাজ নয়। প্রতিবার যেতে হয় দড়ি ধরে, প্রবল হাওয়া আর বরফঝড়ের মাঝে। সামান্য পা ফসকালেই নিচে গভীর খাদ সোজা মৃত্যুর দিকে পতন।
শীতকালে এখানে তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অন্ধকার, তুষারঝড় আর পিচ্ছিল পথ মিলিয়ে টয়লেট পর্যন্ত পৌঁছানো যেন এক যুদ্ধের সমান। অনেক সময় তুষারে পথ বন্ধ থাকায় সরঞ্জাম আনা-নেওয়া পর্যন্ত করা হয় হেলিকপ্টারে।
এক ট্রাভেলার ইনস্টাগ্রামে এই টয়লেটের ছবি পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। লাখো মানুষ জানতে চান, এমন জায়গায় কেউ কীভাবে টয়লেট ব্যবহার করে?
এই টয়লেট শুধু এক অদ্ভুত নির্মাণই নয় এটি মানুষের সাহস, অভিযোজনক্ষমতা ও বেঁচে থাকার লড়াইয়ের প্রতীক। সাইবেরিয়ার অমানবিক ঠান্ডায়, চরম বিপজ্জনক পরিবেশেও বিজ্ঞানীরা কাজ চালিয়ে যান, প্রয়োজন মেটান এ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ।
প্রকৃতির কঠোরতার মধ্যে দাঁড়িয়ে এই টয়লেট যেন প্রমাণ করে মানুষ চাইলে যেকোনো পরিবেশেই টিকে থাকতে পারে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আরটিভিএসকে

Comments
Post a Comment