জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর খসড়া প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে এই খসড়া সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া সনদটি পাঠানো হয়েছে।
জুলাই জাতীয় সনদের খসড়াটি হুবহু তুলে ধরা হলো- বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত সফল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জোট ও শক্তিসমূহের প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে নিম্নলিখিত বিষয়ে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি।
১ । পটভূমি ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামজিক সুবিচারের নীতিকে ধারণ করে সংগঠিত মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছিল, দীর্ঘ ৫৩ বছরেও তা অর্জন করা যায়নি। কারণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও সংস্কৃতি বিকাশের ধারা বারবার হোঁচট খেয়েছে। বস্তুতপক্ষে, বিগত ৫ দশকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একদিকে টেকসই ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। অপরদিকে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নামেমাত্র থাকলেও তা অত্যন্ত দুর্বলভাবে কাজ করেছে।
২। সংস্কার কমিশন গঠন বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রেরিত প্রশ্নে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৭ অক্টোবর সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। কমিশনগুলো হচ্ছে, সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন। কমিশনগুলো গত ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সুপারিশসহ সরকারের কাছে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।
৩। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টাকে সভাপতি, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানকে সহ-সভাপতি এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের একজন সদস্য নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে। পরে ওই কমিশন কিছুটা পুনর্গঠন করা হয়। কমিশনের দায়িত্ব ছিল, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিসমূহের সঙ্গে আলোচনা করা এবং এ মর্মে পদক্ষেপ সুপারিশ করা
Comments
Post a Comment