ছাত্রদলের ১১ সদস্যের কমিটির ৬ নেতারই ছাত্রত্ব নেই

 



চার বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। কেন্দ্র ঘোষিত এই কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে ৬ জন নেতারই ছাত্রত্ব নেই। এর আগে, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব রাবিতে এসে বলেছিলেন, এই ক্যাম্পাসে কমিটি হলে তা হবে সম্পূর্ণ নিয়মিত ছাত্রদের দ্বারা।'

অন্যদিকে, ১১ সদস্যের কমিটির মধ্যে চারজন নিয়মিত ও একজন এমফিলের ছাত্র। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বাকিরা নিয়মিত ছাত্র নন। ছাত্রত্ব দেখাতে তাদের কেউ কেউ সান্ধ্য মাস্টার্স ও ভাষাশিক্ষার স্বল্পমেয়াদি কোর্সে ভর্তি হওয়ার দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।  


ঘোষিত কমিটির সভাপতি সুলতান আহমেদ (রাহী) বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তবে বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি এ বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী নন। তিনি ২০১৯ সালে সান্ধ্য মাস্টার্সে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভর্তি সম্পন্ন করেননি। তার বাসা রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায়।


দায়িত্ব পাওয়া নতুন সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল। তিনি ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। জানা গেছে, কমিটি ঘোষণার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাশিক্ষার একটি স্বল্পমেয়াদি কোর্সে তিনি ভর্তি হয়েছেন। তার বাসা পাবনার সাঁথিয়ায়।

কমিটির সহসভাপতি মেহেদী হাসান ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এবং সাবিহা আলম (মুন্নি) আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহের রহমান ফারসি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের সকলেই বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। 


ছাত্রদলের খসড়া গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক ও অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরাই কেবল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার এ এইচ এম আসলাম হোসেন বলেন, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চলমান শিক্ষার্থীর বাইরে কাউকে নিয়মিত শিক্ষার্থী বলার সুযোগ নেই। যারা সান্ধ্য বা ভাষাশিক্ষার কোর্সে ভর্তি আছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীর মতো মেডিকেল, আবাসিক হল, বাস বা সমাবর্তনের সুযোগ পান না।

নতুন এই কমিটির চার নেতা নিয়মিত এবং একজন এমফিলের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা হলেন সহসভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস ও দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন। সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু সম্প্রতি ‘মানবিক’ কারণ দেখিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পেয়েছেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই সময় ড্রপ আউট হয়ে ছাত্রত্ব হারিয়েছিলেন। এদিকে এমফিলে ভর্তি হয়েছেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ । তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

Countdown Timer
00:01

Comments

Popular posts from this blog

দেশে আবারও করোনায় মৃত্যু, শনাক্ত ৩

১২শ বস্তা চাল উদ্ধার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফের বক্তব্য

ঢাকায় আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩