আফগানিস্তানকে হারাল শ্রীলঙ্কা, সুপার ফোরে বাংলাদেশ

 



এশিয়া কাপের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এতে লঙ্কানদের সঙ্গে বাংলাদেশেরও সুপার ফোর নিশ্চিত হয়েছে আর ভালো খেলেও টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে আফগানিস্তান।


বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপে চাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা জিতেছে প্রথম পর্বের তিনটি ম্যাচই। তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। হংকং আগেই বিদায় নিশ্চিত করেছিল, এবার আফগানিস্তানও যোগ দিল তাদের সঙ্গী হিসেবে।


এশিয়া কাপের এই অধ্যায় শেষ হলো এক রোমাঞ্চকর সমীকরণের মধ্য দিয়ে—যেখানে অন্য দলের জয়ে টিকে রইল বাংলাদেশের আশা। নেট রানরেটের মারপ্যাঁচে ছিটকে গেছে রশিদ খানের দল। আজকের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানরা ১৭০ রানের টার্গেট দেওয়ার পর বাংলাদেশের সমীকরণটা ছিল এমন-হয় শ্রীলঙ্কাকে এই রান তাড়া করে জিততে হতো, নয়তো ১০১ রানের মধ্যে অলআউট হতে হতো।


সুপার ফোরে উঠতে বাঁচামরার এই ম্যাচে আফগানিস্তান টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ৮ উইকেটে ১৬৯ রান তোলে। শেষ ওভারে মোহাম্মদ নবীর ঝড়ে ৩২ রান তুললেও শ্রীলঙ্কা রানটা টপকে গেছে ৮ বল হাতে রেখেই। ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।


১৭০ রান তাড়ায় ভালো শুরু করে শ্রীলঙ্কা। তারা দুই ওভারে তোলে ২২ রান। তবে তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়েই পাথুম নিশাঙ্কাকে ফেরান আজমতউল্লাহ ওমরজাই। নিশাঙ্কা করেন ৫ বলে ৬। এরপর কামিল মিশরাও সুবিধা করতে পারেননি। ১০ বল খেলে মাত্র ৪ রান করে হন নবির শিকার। তৃতীয় উইকেটে ৩৬ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন দুই কুশল-মেন্ডিস আর পেরেরা। মুজিব উর রহমানের ঘূর্নিতে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হন কুশল পেরেরা। ২০ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২৮।


কুশল মেন্ডিস একটা প্রান্ত ধরে ফিফটি তুলে নেন। তবে চারিথ আসালাঙ্কা ধৈর্য ধরে থাকতে পারেননি। ১২ বলে ১৭ করে নুর আহমেদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লঙ্কান অধিনায়ক। বাকি পথটুকু সহজে পাড়ি দিয়েছেন দুই মেন্ডিস। কামিন্দু মেন্ডিস ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। কুশল ৫২ বলে ১০ বাউন্ডারিতে করেন হার না মানা ৭৪।


এর আগে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও সাদিকুল্লাহ অটল। প্রথম দুই ওভারে আফগানরা তোলে ২৬ রান। তবে ১৮ ওভার শেষে আফগানিস্তানের ছিল ১২০ রান। ১৯তম ওভারে দুশমন্ত চামিরাকে টানা তিন বলে তিন বাউন্ডারি হাঁকালেন মোহাম্মদ নবি। শেষ ওভারে তো আরও ভয়ংকর হয়ে উঠলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। দুনিথ ওয়াল্লাগেকে প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে আফগানিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং পুঁজিতে নিয়ে গেলেন নবি। ৮ উইকেটে আফগানিস্তান তোলে ১৬৯ রান। 


তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই আঘাত হানেন নুয়ান তুষারা। ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ার বলে চড়াও হতে গিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ হয়ে ফেরেন গুরবাজ (৮ বলে ১৪)। ওভারের শেষ বলে আরও এক উইকেট। এবার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড করিম জানাত (১)। সেদিকুল্লাহ অতল অনেকটাই সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার ব্যাট প্যাডের ফাঁক গলে তুষারা করেন আরেকটি বোল্ড। ১৪ বলে ১৮ করে ফেরেন অতল। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৫ তোলে আফগানরা।


চতুর্থ উইকেটে ধরে খেলায় মনোযোগ দেন ইব্রাহিম জাদরান আর দারউইশ রসুলি। ৩৪ বলে তাদের ২৪ রানের ধীরগতির জুটিটি শেষ পর্যন্ত ভাঙে বাউন্ডারিতে দারুণ এক ক্যাচে। দুশমন্ত চামিরার বলে ডিপ থার্ড ম্যানে ক্যাচ তালুবন্দি করেছিলেন কুশল পেরেরা। কিন্তু ভারসাম্য রাখতে না পেরে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়ে দেন তিনি। পরে বাউন্ডারির ভেতর এসে নেন বুদ্ধিদীপ্ত এক ক্যাচ। ১৬ বলে ৯ করেন রসুলি।


পরের ওভারে জাদরানও আউট। এবার ওয়াল্লালাগের বলে লংঅনে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন তিনি। বাউন্ডারিতে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন চামিরা। জাদরানের ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ২৪। ৭৯ রানে ৬ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। সেখান থেকে মোহাম্মদ নবি আর রশিদ খান দলের হাল ধরেন। ৩০ বলে ৩৫ রান যোগ করেন তারা। ২৩ বলে ২৪ করে তুষারার বলে বোল্ড হন রশিদ খান।

 

এরপর রীতিমত ভয়ংকর হয়ে উঠেন নবি। ১৯তম ওভারে তিন বাউন্ডারি আর শেষ ওভারে ওয়াল্লালাগের প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে হিসেব ঘুরিয়ে দেন তিনি। ২২ বলে ৬০ রানের ইনিংসে ৩টি চার আর ৬টি ছক্কা হাঁকান নবি। শেষপর্যন্ত নবির ঝড় আড়াল করে দিলো মেন্ডিসের অনবদ্য এক ইনিংস।


নুয়ান তুষারা ১৮ রানে শিকার করেন ৪ উইকেট।


Countdown Timer
00:01

Comments

Popular posts from this blog

দেশে আবারও করোনায় মৃত্যু, শনাক্ত ৩

১২শ বস্তা চাল উদ্ধার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফের বক্তব্য

ঢাকায় আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩