যে ফল ছিল নবীজির (সা.) প্রিয়
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় ফলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য হলো খেজুর। হাদিস ও সিরাতের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নবীজি (সা.) বিশেষভাবে আজওয়া খেজুরকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। এই খেজুরকে তিনি জান্নাতের ফল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন এতে রয়েছে জাদু ও বিষের প্রতিষেধক।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি সকালে খালি পেটে মদিনার উঁচু ভূমির আজওয়া খেজুর খাবে, তা সব ধরনের জাদু ও বিষ থেকে আরোগ্য হিসেবে কাজ করবে।” অন্য এক হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন—“আজওয়া জান্নাতের ফল, এতে বিষের প্রতিষেধক আছে।”
এমনকি হজরত সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি অসুস্থ হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার চিকিৎসায় আজওয়া খেজুর ব্যবহার করতে নির্দেশ দেন। নবীজি (সা.)-এর তত্ত্বাবধানে আজওয়া খেজুর দিয়েই হৃদরোগের চিকিৎসাও করা হয়েছিল।
খেজুর ছাড়াও নবীজির (সা.) আরেক প্রিয় ফল ছিল জয়তুন। এর ফল এবং তেল তিনি নিজে ব্যবহার করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও ব্যবহার করার নির্দেশ দিতেন। উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—“তোমরা জয়তুনের তেল খাও এবং শরীরে মালিশ করো। কেননা এটি বরকতময় ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল।”
কোরআনেও জয়তুনের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুরা ত্বিনের শুরুতেই মহান আল্লাহ তায়ালা এই ফলের কসম করেছেন। কোরআনের আরেক জায়গায় আল্লাহ বলেছেন, “প্রদীপটি বরকতময় জয়তুন গাছের তেল দ্বারা জ্বালানো হয়, যা পূর্ব দিকেরও নয়, পশ্চিম দিকেরও নয়।”
জয়তুন ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও পুষ্টিগুণ। এতে আছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও আয়োডিন। এছাড়া জয়তুনের তেলে থাকা অ্যালেইক অ্যাসিড হৃদ্রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহার করলে চুল ও দাড়ির আগাম পাকা প্রতিরোধ হয়।
আজওয়া ও জয়তুন; উভয় ফলই ইসলামে শুধু প্রিয় খাবার নয়, বরং সুস্থ জীবনের জন্য অনন্য নিয়ামত ও বরকত।
Comments
Post a Comment