মৃত ব্যক্তিকে বরইপাতা দিয়ে গোসল করানো হয় কেন?
মৃতব্যক্তিকে গোসল দেয়া ফরজে কেফায়া। অনেকে গোসল দেয়াকে ওয়াজিব বলেছেন। তবে মানুষ মারা গেলে তাকে সঠিকভাবে গোসল দেয়া উত্তম। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো কুল বা বরই পাতা মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল দেয়া। কিন্তু মৃতব্যক্তিকে বরই পাতা মেশানো পানিতে গোসল দেয়ার কারণ কী?
মানুষ মারা গেলে বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করানো হয়। কিন্তু কেন বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করানো হয়, এ বিষয়টি অনেকেই জানে না। মৃতব্যক্তিকে বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল দেয়ার কথা বলেছেন বিশ্বনবি।
হাদিসে এসেছে- হজরত ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, ‘এক ব্যক্তি আরাফাতে অবস্থানের সময় তার উটনী থেকে পড়ে যায়। এতে তার ঘাড় মটকে যায় (এতে সে মারা যায়)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল করাও এবং দুই কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা কেয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উঠবে।’ (বুখারি)
হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃতব্যক্তির গোসলের পানিতে বড়ই বা কুলপাতা দেয়া ইসলামি শরিয়ত সম্মত একটা রীতি। কেননা বরই পাতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য খুব কার্যকরী। যদি বরই পাতা না পাওয়া যায় তবে সাবান বা এ জাতীয় কিছু ব্যবহার করাই যথেষ্ট। আর বরই পাতা মেশানো পানিতে গোসল করানো হলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত আদায় হয়।
বিজ্ঞানের গবেষণা থেকে প্রমাণিত যে, বরই পাতায় বেশ কিছু এন্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। যা পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে বা পানিতে দিয়ে হালকা গরম করলে বরই পাতা থেকে এক ধরনের আঁঠালো নির্যাস পানির সঙ্গে মিশে যায়। আর এ নির্যাসগুলো মানুষের শরীরকে জীবাণু মুক্ত করার কার্যকরী অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। সহজে এ শরীরে যেমন পোকা-মাকড় আক্রমণ করতে পারে না আবার এ দেহে সহজে পচন ধরে না। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে এ কারণেই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তিকে বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করানোর কথা বলেছেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, মৃত মানুষকে বরই পাতা মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল দেয়া। এতে মৃতের লাশ যেমন থাকবে জীবাণুমুক্ত পরিচ্ছন্ন। আবার হাদিসের নির্দেশনার ওপরও হবে যথাযথ আমল।
Comments
Post a Comment