যৌন নির্যাতনের পর নারীদের মস্তিষ্কে ঘটে ভয়ানক পরিবর্তন! দাবি গবেষণায়

 



যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্কেও ঘটে ভয়ানক পরিবর্তন। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নির্যাতনের পর মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশের সংযোগ ভেঙে যায়, যা আবেগ ও ভয় নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতার পর নারীদের মস্তিষ্কে অ্যামিগডালা ও প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স-এই দুই অংশের মধ্যে যোগাযোগ বা ‘কানেক্টিভিটি’ মারাত্মকভাবে কমে যায়।


অ্যামিগডালা আমাদের ভয়, উদ্বেগ ও আবেগের প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স কাজ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ও আবেগকে সংযত করার জন্য। এই দুইয়ের সংযোগ দুর্বল হয়ে গেলে মানুষ নিজের ভয় বা মানসিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর এটি পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের (পিটিএসডি) প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গবেষণাটিতে ৪০ জন নারীর স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে। যারা সম্প্রতি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে অনেকেই পিটিএসডি-তে ভুগছিলেন। গবেষকরা তাদের মস্তিষ্কের ফ্যাংশনাল এমআরআই (এফএমআরআই) স্ক্যান করে দেখতে পান যে প্রায় ২২ জনের মস্তিষ্কে অ্যামিগডালা ও প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের সংযোগ প্রায় ভেঙে গেছে। বাকিদের ক্ষেত্রেও সংযোগ খুব দুর্বল ছিল।


এমআরআই-এর এই ফলাফল প্রকাশ করেছে যে, যৌন নির্যাতন শুধু মানসিক আঘাত নয়, মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তনেরও কারণ।


আসলে পিটিএসডি এমন একটি মানসিক রোগ, যা ভয়াবহ বা আঘাতমূলক ঘটনা, যেমন ধর্ষণ, দুর্ঘটনা, যুদ্ধ বা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ঘটে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তাদের ঘুমের সমস্যা দেখা দেয় এবং বারবার সেই ঘটনার ভয়ংকর মুহূর্তগুলো মনে পড়ে যায়।


বিশেষজ্ঞদের মতে, যৌন নির্যাতনের শিকার প্রায় ৭০ শতাংশ নারী পিটিএসডি-তে আক্রান্ত হন। গবেষণার অন্যতম সদস্য জানিয়েছেন, নারীদের মস্তিষ্কে এই সংযোগ বিচ্ছিন্নতা দেখা যাচ্ছে মানে তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

গবেষকদের মতে, এই মস্তিষ্কীয় পরিবর্তনগুলোকে যদি আগে থেকে শনাক্ত করা যায়, তবে নির্যাতিতদের মানসিক ক্ষতি বাড়ার আগেই চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাকে আরো গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।


বিশেষজ্ঞদের মতে, যৌন নির্যাতনের মানসিক ক্ষত শরীরের ক্ষতের চেয়েও গভীর। এই গবেষণা নতুন করে বুঝিয়ে দিল, কেন মানসিক যত্ন, কাউন্সেলিং ও সামাজিক সহানুভূতি এত প্রয়োজন। আঘাতের দাগ শুধু মনের মধ্যে নয়, মস্তিষ্কের গভীরেও থেকে যায় তার ছাপ।

Countdown Timer
00:01

Comments

Popular posts from this blog

অজুর পর মূত্র ফোঁটা বেরিয়েছে মনে হলে যা করবেন, জেনে নিন শরিয়তের স্পষ্ট নির্দেশনা!

লিঙ্গে শক্তি না আসার ৫টি প্রধান কারণ

বাথরুমে ওজু বা নামাজ পড়া যাবে?